এটি একটি ভাইরাসঘটিত রোগ। র্যাবিস ভাইরাসের কারণে এই রোগ হয়। এই ভাইরাসের আকৃতি দেখতে অনেকটা গুলির বুলেটের মতো। কোন ব্যক্তির র্যাবিস হলে তার মৃত্যুর সম্ভাবনা ১০০%। জলাতঙ্ক অর্থাৎ র্যাবিস ভাইরাসজনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। র্যাবিস ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কুকুর রোগটির প্রধান বাহক।
কার্যকরী চিকিৎসাবিহীন এই রোগের লক্ষণ প্রকাশের ৭-১০ দিনের মধ্যে আক্রান্ত রোগী মৃত্যুবরণ করে। তবে সময়মত অর্থাৎ কামড় বা আঁচড়ের সাথে সাথে আক্রান্ত স্থান সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণের মাধ্যমে রোগটি শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরও পড়ুনঃ Tetanus (টিটেনাস) রোগ এবং ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া
রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম
কীভাবে এই রোগ ছড়ায়?
কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, হায়না, বাদুড়, খরগোশ, ছাগল, ভেঁড়া এসব প্রাণী যদি ইনফেক্টেড থাকে তাহলে তাদের কামড়ে এই রোগ ছড়ায়.. কারণ তাদের লালা (থুথু) তে Rabies (র্যাবিস) ভাইরাস থাকে। যাদের র্যাবিসের বিরুদ্ধে শরীরে এন্টিবডি তৈরী হতে পারে না তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যু অবধারিত। অনেকসময় ঐসব প্রাণী কামড় দেওয়ার পর ৫ বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত ভাইরাস টা কোনো রোগ সৃষ্টি করে না। পরবর্তীতে জ্বর, চুলকানি, বমি হওয়া, মাংসপেশিতে ব্যথা, মাথাব্যথা, আচরণগত সমস্যা, হাঁটাচলার মোভমেন্ট ঠিক না থাকা, বেশি বেশি লালাক্ষরণ হওয়া, কোমায় চলে গিয়ে রোগী মারা যায়। “বুলেন-বারি (Bullen-Barre)” নামক একধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। এই রোগের কারণে মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়।
কীভাবে প্রতিরোধ করবো?
র্যাবিস একটি এনভেলপ (লিপোপ্রোটিন দিয়ে তৈরী একটা গঠন) ভাইরাস। যদি কামড়ানোর সাথে সাথে ১৫ মিনিট ধরে সাবান-পানি অথবা ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে ধুয়ে ফেলেন তাহলে এনভেলপ নষ্ট হয়ে যায় এবং ভাইরাসের কার্যক্রম অনেকটা কমে যায়। কামড়ানো স্থান সবসময় খোলা রাখতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব র্যাবিসের ভ্যাক্সিন দিয়ে নিতে হবে।
ভ্যাক্সিন দেওয়ার নিয়ামবলি –
হাতের উপরের অংশে (ডেলটয়েড অংশে) দিতে হবে। অথবা পাছায় (গ্লুটিয়াল অংশে) দিতে হবে।
যদি স্কিনের উপরের স্তরে দেই তাহলে ডোজ হবে –
- প্রথদিন – ২ ডোজ
- ৩ দিন পর – ২ ডোজ
- ৭ দিন পর – ২ ডোজ
- ১৪ দিন পর – ০ ডোজ
- ২১-২৮ দিন পর – ০ ডোজ
আর যদি স্কিনের একটু ভিতরে দেই তাহলে –
- প্রথমদিন – ২ ডোজ
- ৩ দিন পর – ০ ডোজ
- ৭ দিন পর – ১ ডোজ
- ১৪ দিন পর – ০ ডোজ
- ২১-২৮ দিন পর – ১ ডোজ
ভ্যাক্সিন দেওয়ার জন্য ৭ দিনের মধ্যে আসতে হবে (যদি পায়ে কামড় দেয়)। আর যদি ব্রেইনের আশেপাশের অংশে কামড় দেয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাক্সিন দিয়ে নিতে হবে। নিজে সতর্ক থাকবেন। নিজের পরিবার-পরিজন কে সতর্ক করবেন।
Rabies (র্যাবিস) রোগ হতে পারে যার কারনে