বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় অনেক বেশি কষ্ট, ব্যথা, আসন্ন দাঁতের মাড়ি অনেকদিন যাবৎ ফুলে থাকলেও দাঁত না আসা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে গড়িমসি না করে দ্রুত বাচ্চাকে একজন রেজিস্টার্ড (বিডিএস) ডেন্টাল সার্জনের কাছে নিয়ে যাবেন।
শিশুর দাঁত ওঠার সময় সচরাচর যেসব লক্ষণ দেখা দেয়
- যে কোনও কিছু মুখে দিয়ে কামড়ানো,
- খুব বেশি কামড়ানোর প্রবণতা,
- লালা পড়া বেড়ে যাওয়া,
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা,
- খাবার খেতে অনীহা,
- মুখের চারপাশে rash,
- বারবার কান ও গাল চুলকানো,
- গা হালকা গরম বোধ হওয়া (জ্বর নয়),
- ঘুমাতে অসুবিধা হওয়া।
দাঁত ওঠার সময়টাতে শিশু বেশ অস্বস্তি ও কষ্ট অনুভব করে, যা তারা বলে বোঝাতেও পারে না। এমতাবস্থায় আমরা কীভাবে শিশুকে একটু আরাম দিতে পারি? প্রথম কথা, এই সময় শিশু কেমন অনুভব করে, কী কী অসুবিধা বোধ করে, সেটা জানতে হবে।
- এ সময় তার মাড়িতে শিরশির করছে। কিছু কামড়ালে আরাম বোধ করে। তাকে মাড়িতে মাসাজ করে দিন। টিদার কিনে দিন। বাচ্চার বয়স বুঝে আপেল, গাজর, পেয়ারা লম্বা করে কেটে দিতে পারেন।
- মাড়িতে ঠাণ্ডা সেঁক আরাম দেয়। তাই ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করা যায়, এমন টিদারগুলো দিতে পারেন। বাচ্চা একটু বড়ো হয়ে থাকলে, ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা না থাকলে এবং গরমের দিন হলে কিছু ঠাণ্ডা খাবার দিতে পারেন। যেমন – টক দই, ফলের রস দিয়ে তৈরি পপসিকল।
- শিশুর হাতের নাগালের সব কিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। কারণ এ সময় যা তা মুখে দেওয়ার ফলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- শিশুর খাবার খেতে না চাইলেই অনেক বাবা মা অস্থির হয়ে পড়েন। প্রথমেই মেনে নিতে চেষ্টা করুন দাঁত ওঠার সময় খাবার খেতে না চাওয়া একটা সাময়িক অবস্থা। দয়া করে এই সময় শিশুকে খাওয়ার জন্যে জোরাজুরি, বকাঝকা করে তার মনে খাবারের প্রতি দীর্ঘস্থায়ী আতংক সৃষ্টি করবেন না।
- লালা পড়া বেড়ে গেলে বিব পরিয়ে রাখুন। বিব, জামা ভিজে গেলে বদলে দিন।
- ঠোঁট, গাল, চিবুক, গলায় লালা লেগে থাকলে দ্রুত মুছে দিন। জায়গাগুলো যথাসম্ভব শুকনো রাখুন।
- শিশুকে আদর ও যত্ন দিয়ে শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন। সে ভালো বোধ করছে না বিধায় খিটখিট করছে, কান্নাকাটি করছে। তার খিটখিটে ব্যবহারের বিপরীতে আপনিও রাগারাগি করলে কোনও জাদুর বলে তার কষ্টও দূর হয়ে যাবে না, মেজাজও ভালো হয়ে যাবে না।
©ডা. ইফফাত সামরিন মুনা, ডেন্টাল সার্জন, Hospitalin