দাঁত আকাবাঁকা হওয়া নিয়ে অনেকেই জানতে চাচ্ছিলেন। তাই দাঁত বা চোয়ালের এই ধরণের সমস্যা প্রতিরোধে সচেতন থাকুন। আর সমস্যা হয়েই গেলে চিকিৎসা নিতে দেরি করা ঠিক নয়। অনেকেই দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা বা অনেক বেশি খরচ ভেবে চিকিৎসা করানো থেকে বিরত থাকেন। অনেকে মনে করেন প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত এ ধরণের সমস্যার চিকিৎসা নেওয়া যায় না। এসব ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। এদিক ওদিক না খুঁজে ডাক্তারের কাছে গিয়েই দেখুন। আজ তাই এই বিষয়ে লিখছি।
দাঁত আকাবাঁকা উঁচুনিচু ফাঁকা কেনো হয়?
- চোয়াল ও দাঁতের আকারে অসামঞ্জস্য
- দাঁত অনেক বেশি ক্ষয় হয়ে যাওয়া
- সঠিক সময়ের আগে দাঁত পড়ে যাওয়া, দাঁত তুলে ফেলার প্রয়োজন হওয়া
- সঠিক বয়সে ফিডার, পেসিফায়ার ব্যবহার বন্ধ না করা
- ২ বছর বয়সের পর আঙুল চোষা
- দাঁত দিয়ে নখ কাটা
- জিহ্বা দিয়ে দাঁতে ধাক্কা দেওয়ার বদভ্যাস
- পেন্সিল /কলম কামড়ানোর বদভ্যাস
- ঠোঁট কাটা, তালু কাটা নিয়ে জন্মানো
- অস্বাভাবিক আকার আকৃতির দাঁত, অতিরিক্ত দাঁত
- অ্যাডেনয়েড বড়ো থাকা বা অ্যালার্জিজনিত কারণে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া
- চোয়ালে বড়ো ধরণের আঘাত
- মুখে সিস্ট
- মুখে টিউমার
- বংশগত
তো থাকুক দাঁত একটু আকাবাঁকা, ক্ষতি কী? দেখতে তো ভালোই লাগে। চিকিৎসা কেনো করানো লাগবে? চিকিৎসা করাতে হয়, কারণ –
১) দাঁত আকাবাঁকা, এক দাঁতের ওপর পাশের দাঁত হেলে আছে বা দুই দাঁতের মাঝে ফ্লস করবার মতো ফাঁকা-ই নেই। এমন অবস্থায় দাঁত ও মুখ পুরোপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না ফলে দাঁত ও মাড়ির এসব ফাঁকে খাদ্যকণা জমে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে।
২) দাঁত আকাবাঁকা, দাঁত বা চোয়াল উঁচু থাকলে দুই পাটি দাঁতের মধ্যে কামড় ঠিকভাবে বসে না। এতে খাবার ভালোভাবে চিবাতে, গিলতে, কথা বলতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় আমাদের এরকম অসুবিধা হতে থাকে, কিন্তু আমরা বুঝতেই পারি না যে, এটি দাঁতের সমস্যার কারণে হচ্ছে।
৩) দীর্ঘদিন ভুল পজিশনে ব্যবহার হতে হতে চোয়ালের পেশি এবং জয়েন্টে সমস্যা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে!
৪) অনেকের এক পাটির দাঁতের কামড় গিয়ে পড়ে অপর পাটির নরম অংশে, যেমন তালু ঠোঁট বা মাড়িতে! এতে বারবার ঐ নরম অংশ ক্ষত বিক্ষত হতে থাকে!
৫) দাঁতের বিন্যাস ঠিক না থাকলে অনেক সময় ওপর ও নিচের পাটির দাঁতে দাঁতে অযাচিতভাবে ঘষা লাগে। এভাবে ক্রমাগত ঘষা লাগতে লাগতে দাঁত ক্ষয় হয়ে যেতে পারে।
৬) দাঁত ও চোয়ালের অস্বাভাবিকতার কারণে বুলিইংয়ের ঘটনা বিরল নয়। আবার অনেকে নিজেও এর কারণে সামাজিক মেলামেশায় বিব্রত বোধ করে থাকেন।
ডা. ইফফাত সামরিন মুনা, ডেন্টাল সার্জন।
শিশুদের দিনলিপি