হেলের দৈহিক গড়ন ছোট এবং চিকন। এরা সাধারণত বাদামি, মেটে বা কালচে রঙের হয়ে থাকে। এছাড়াও অঞ্চলভেদে আরও রঙের হেলে পাওয়া যেতে পারে। এদের দেহ এবং মাথা একই রঙের হয়। এবং মাথার দুইট পাশ হলদে রঙের হয়ে থাকে। চোখ গোলাকার এবং বড়। চোখের মনির পাশ দিয়ে গোল্ডেন কালারের আইরিশ রয়েছে। চোখের সামনে এবং পিছনে কালো দাগ রয়েছে। চোখ থেকেও কালো দাগ নিচের দিকে নেমে গিয়েছে। হেলের জিহ্বা কালো রঙের হয়। ব্রিডিং সিজনে ঘাড় লালচে রঙের হয় [রেড মর্ফের দেহ সহ লাল হবে। আর প্রজননকালে যে লাল রঙ আসবে তা শুধু ঘাড়ে (Nape) এ হবে। দেহের অন্য কোন অংশে এর প্রভাব পড়বে না]।
এদের ঘাড়ের একটু পর থেকে দেহের দুইপাশে হলুদ দুইটি স্ট্রিপ লেজ পর্যন্ত চলে গেছে। মেরুদন্ডের দুইদিকে এই হলুদাভ স্ট্রিপ দুটোর জন্যই এর নাম মূলত buff striped। দেহ জুড়ে মোটা কালো ব্যান্ড রয়েছে। পেট সাধারণত ফ্যাকাশে সাদা কালারের হয়। হেলে সাধারণত ১৫-২০ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। নারী সাপ পুরুষ সাপের থেকে বড় হয়ে থাকে। সাধারণত দেহের তুলনায় লেজ লম্বা হয়ে থাকে।
হেলের Dorsal scales গুলো keeled (অমসৃণ) বৈশিষ্ট্যের হয়। হেলে একটি oviparous snake, অর্থাৎ এরা ডিম পারে। এদের মেটিং সিজন এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত। তবে বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে সেটা পরিবর্তিত হতে পারে। স্ত্রী হেলে সাধারণত ৫-৮ টা ডিম পাড়ে। সর্বোচ্চ ১৫টির রেকর্ড রয়েছে। ডিম পাড়ার কিছুদিন পর্যন্ত হেলে তার ডিমকে পাহাড়া দেয়। ৫০/৬০ দিন পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। যা সাধারণত ৪/৫ ইঞ্চির মত লম্বা হয়ে থাকে। মেটিং সিজনে স্ত্রী সাপের ফেরোমনে আকৃষ্ট হয়ে অসংখ্য হেলে একত্রে snake ball তৈরি করতে পারে। অবশ্য একটি মাত্র পুরুষের সুযোগ হয় সেই স্ত্রী সাপকে পাওয়ার।
- নাম: হেলে।
- ইংরেজি নাম- Buff Striped keelback.
- বৈজ্ঞানিক নাম- Amphiesma stolatum.
- প্রচলিত নাম- অঞ্চলভেদে দাগি ঢোঁড়া, এনি, জিংলাপোড়া, নিলাম্বরী, চিলু, চ্যালো, ভেংটু, ঘেউটিয়াসহ আরও বিভিন্ন ডাকা হয়।
- বিষের ধরন: সম্পূর্ণ নির্বিষ।
হেলে | Amphiesma Stolatum – Buff Striped Keelback
খাদ্য তালিকাঃ হেলে একটি diurnal snake, অর্থাৎ এরা দিনে চলাচল এবং শিকার করে। এদের প্রধান খাদ্য ছোট ব্যাঙ, টিকটিকি, পোকামাকড়, এবং মাছ।
অঞ্চলঃ বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই একে কমবেশি দেখতে পাওয়া যায়।
চিকিৎসাঃ হেলে শান্ত প্রকৃতির সাপ। এর বিষগ্রন্থি বা বিষদাঁত নেই। তাই মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে মাংসাশী হওয়ায় এর স্যালাইভাতে ব্যাকটেরিয়া থাকে যা দ্বারা ইনফেকশন হতে পারে। তবে কামড়ের স্থানে ভালোভাবে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিলেই চিন্তামুক্ত থাকা যায়।